বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাটের শরণখোলায় ড. মাসুম বিল্লাহ ডিএন কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ মুহাঃ মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগের ঝড় উঠেছে। জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, নারীকেলেঙ্কারি, ভুয়া সনদ ব্যবহার থেকে শুরু করে ক্ষমতার অপব্যবহার—সবকিছুতেই নাম জড়াচ্ছে তার। শিক্ষক-কর্মচারী, ট্রাস্টি এবং ভুক্তভোগীরা সরব হয়ে বলছেন, “তিনি একজন অযোগ্য, অনৈতিক ও ভুয়া সনদের ধারক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছেন।” অভিযোগে বলা হয়েছে, ইসলামের ইতিহাসে বিএ ও এমএ ডিগ্রিধারী মাহমুদুল হাসান ঘুষের মাধ্যমে অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন—যেখানে নিয়ম অনুযায়ী একটি কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য প্রয়োজন এম.কম (ব্যবসায়) বা এমএসএস ডিগ্রি। এমনকি প্রয়োজনীয় ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাও তার ছিল না। ভুয়া কাগজপত্রে নিয়োগ পাওয়ার পাশাপাশি একই সময়ে দুটি একাডেমিক ডিগ্রি (ফাজিল ও বিএ অনার্স) অর্জনের মাধ্যমে আইন ভঙ্গ করেছেন তিনি।
কলেজের ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২৭ জন তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন। অভিযোগের তালিকায় রয়েছে—
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি অপরাধীদের নিয়ে প্রভাব খাটাচ্ছেন। এমনকি একাধিকবার বরখাস্ত হলেও নোংরা কৌশল ও রাজনৈতিক আশ্রয়ে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন।
অভিযোগকারীদের দাবি—
“একজন ভুয়া সনদধারী প্রতারককে দুই দশক ধরে অধ্যক্ষের আসনে বসিয়ে রাখা শুধু শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ ড. মাসুম বিল্লাহর দানকৃত জমি ও কোটি কোটি টাকার আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত কলেজটি এখন দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিষ্ঠাতার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়েই মাহমুদুল হাসান ও তার সহযোগীরা প্রতিষ্ঠানটিকে বিতর্কিত করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা জানান—
“ভুয়া কাগজপত্রে নিয়োগ পাওয়া এ ধরনের অযোগ্য মানুষদের কারণে প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা পড়ছে ভুল হাতে। আমরা চাই দ্রুত তার নিয়োগ বাতিল করা হোক এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই অভিযোগ পেয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে কপি পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিয়োগ বাতিলসহ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।