মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর কর্মী শফিকুল ইসলাম রাতুল এলাকায় ঘুরে প্রকাশ্যে আওয়ামী কর্মকান্ড পরিচালনা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করে তার স্ত্রীকে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি অনুমোদন করানোয় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পলাতক সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার করতো। বিশেষ করে সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের সকল রাজনৈতক ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ড তাকে জানিয়ে করতে হতো।
বিভিন্ন বাজার থেকে চাঁদা উত্তোলনেরও অভিযোগ রয়েছে এই আওয়ামী কর্মীর বিরুদ্ধে। তবে ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতনের পর সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল থেকে পালিয়ে যান।
এরপরে কয়েকদিন গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকেন রাতুল। পরে স্থানীয় বিএনপির কর্মীদের সাথে সমঝোতা করে প্রকাশ্যে আসেন। প্রকাশ্যে এসেই আবারো শুরু করেন একের পর এক বির্তকিত কর্মকান্ড।
স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে রাতুল নিজেকে বিএনপির কর্মী সাজানোর চেষ্টা করছেন। বিএনপির বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেইসাথে আওয়ামী আমলে যেসব বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতো বিএনপির কর্মী সেজে সেসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ শুরু করেছে। এতে করে বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চরকাউয়া ইউনিয়ন বিএনপির দুজন দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, রাতুল বিএনপির হয়ে কাজ করার কথা বললেও আসলে গোপনে সে সাদিক আব্দুল্লাহর কথা বলে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে সাদিক ভালো নেতা ছিলেন, আওয়ামী লীগের আমলে ভালো ছিল মানুষ বলেও প্রচার করার ডকুমেন্টস তাদের কাছে আছে বলে জানান। ওই বিএনপির নেতা দুজন বলেন, আমরা প্রকাশ্যে এই আওয়ামী কর্মীর বিরুদ্ধে কিছু বললে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারেন।
বাসিন্দা দিবা সিকদার বলেন, চরকাউয়া ইউনিয়নের নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি আমার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন মনির। কিন্তু তাকে একটি অনলাইন পত্রিকা আওয়ামী লীগের কর্মী আখ্যা দিয়ে সংবাদ প্রচার করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায়। জানতে পেরেছি সেই পত্রিকার সাথে এই রাতুল জড়িত। আমরা ধারণা করছি আমার স্বামীর সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার সাথে শফিকুল ইসলাম রাতুল জড়িত আছে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামীকে গ্রেফতার করানোর পর বরিশাল বোর্ডকে ভুল বুঝিয়ে একটি নোটিশ জারি করে নতুন ভাবে শফিকুল ইসলাম রাতুলের স্ত্রীকে সভাপতি ঘোষণা দেয়। আমাদের সাথে হওয়া অবিচারের বিচার চাই।
চরকাউয়া ইউনিয়নের নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আমি বোর্ডের পক্ষে। বোর্ড যাকে অনুমোদন দেয় তাকে নিয়েই কাজ করতে হবে।
এছাড়া তাদের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। অভিযোগের বিষয়ে সাদিক আব্দুল্লাহর কর্মী শফিকুল ইসলাম রাতুলের সাথে যোগাযোগ করা হলেও মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যায়নি বিধায় বক্তব্য দেয়া যায়নি।