শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ
দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী রাজু গ্রেফতার গুলিস্তান আহাদ পুলিশ বক্সের বিশেষ অভিযানে দ্রুত বিচার, এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ওয়ারেন্ট তামিল ও মাদক উদ্ধার অভিযানে সাফল্য, শায়েস্তাগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্য পেলেন বিশেষ পুরস্কার স্ত্রীর অধিকার আদায়ে তরুণীর অনশন জৈন্তাপুরে ভুয়া ইজারার কাগজপত্র দেখিয়ে কোটি কোটি আত্মসাৎ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গলে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন এর উদ্বোধন জুড়ীতে যুবলীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়াতে বিএনপির সভাপতি মাসুম রেজার প্রকাশ্যে তদবির হিন্দু প্রেমিকের বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা মুসলিম প্রেমিকার অনশন জৈন্তাপুরে মাওলানা শামিম আহমদকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, থানায় অভিযোগ দায়ের নিজ বাড়ি থেকে মোহনা টিভির সাংবাদিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ধর্মের নামে বৃদ্ধকে হেনস্তা, মানবাধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনায় মামলা
নোটিশ
📢 নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 📢 দৈনিক মিডিয়া বাজ পত্রিকায় জেলা, উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে। ✅ আগ্রহী প্রার্থীদেরকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তাদের সম্পূর্ণ সিভি (CV) নিচের ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে অথবা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলফ যাচ্ছে: 📧 ই-মেইল: editor.mediabuzz@gmail.com. 📱 হোয়াটসঅ্যাপ: ০১৭৭৫০৯৮৬৩৮।  🔒 সতর্কতা: উল্লেখিত ই-মেইল এবং মোবাইল নম্বর ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম বা নম্বরে যোগাযোগ করলে এবং তাতে কেউ প্রতারণার শিকার হলে, দৈনিক মিডিয়া বাজ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

জৈন্তাপুর সারী নদী থেকে চলছে বালু পাথর লুট, নিরব প্রশাসন, চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন
জৈন্তাপুর সারী নদী থেকে চলছে বালু পাথর লুট, নিরব প্রশাসন, চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার প্রধান ও সারাদেশে বাংলার নীল নদী নামে পরিচিত প্রকৃতির কন্যা সারী নদী। এই। উপজেলার সর্ববৃহত বালু খনি হিসাবে পরিচিত। যার ফলে সরকার নদীটি ইজারা দিয়ে রাজস্ব আদায় করছে। ২০১০ সনে লালাখাল চা-বাগান ও নাজিমগড় রির্সোট সারী নদীর উৎস মূখে কয়েকটি দাগের উপর মামলা করে। মামলার প্রেক্ষিতে পুরো সারী নদী হতে বালু উত্তোলনে সরকারি ইজারা বন্দ হয়ে য়ায়। ফলে বেশ কয়েক বৎসর সারী নদীর ইজারা বন্ধ থাকে।

পরবর্তীতে স্থানীয় শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এবং রাজস্ব আদায়ের স্বর্থে সরকার মামলা ভূক্ত এরিয়া চিহ্নিত করে সারী নদীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে। সারীঘাট ব্রীজ হতে পিযাইনের মুখ পর্যন্ত (সারী-১), সারী ব্রীজ হতে কামরাঙ্গী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাট এরিয়া পর্যন্ত (সারী-২) এবং কামরাঙ্গী স্কুল ঘাট হতে সারী নদীর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত (মামলা ভূক্ত এরিায়া) (সারী-৩) বিভক্ত করে।

রাজস্ব আদায় এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের কথা বিবেচনা করে সারী-১, সারী-২ ও বড়গাং নদী ইজারা প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করছেন। সারী-৩ মামলা ভূক্ত এরিয়া কোন প্রকার বালু পাথর উত্তোলন সংগ্রহ পরিবহন করা হতে শ্রমিকদের বিরত নিষেদাজ্ঞা জারী করেন মাহামান্য আদালত।

সম্প্রতি একটি বালু ও পাথর খেকু চক্র সারী-৩ মামলাভুক্ত এরিয়া হতে জমে থাকা বালু পাথরের উপর লেলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা মহামান্য আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে শ্রমিকদের সহজে বালু সংগ্রেহর লোভ দেখিয়ে নিরিহ শ্রমিকদেরকে ভূল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে মামলা ভূক্ত (সারী-৩) হতে নৌকা প্রতি ৮শত হতে ১হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। শ্রমিকদের কষ্ট কম হওয়ায় এবং স্টক বালু পাওয়ার কারনে একান্ত বাধ্য হয়ে চাঁদা দিয়ে বালু সংগ্রহ করেছে।

চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে চাঁদা আদায়কারী ও বারকী শ্রমিকদের মধ্যে হাত্হাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সারী-৩ হতে চাঁদাবাজী বন্দের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া আগষ্ট মাসে সরজমিন পরিদর্শন করেন। ঐসময় দুটি নৌকাসহ তিনশত ফিট বালু জব্দ করেন। কঠোর ভাবে আদালতের নিষেদাজ্ঞা পালনের নির্দেশনা জারী করেন।

বৈষম্য বিরুদী ছাত্র আন্দোরনের পর বালু ও পাথর খেকু চক্র প্রশাসনের নাম ভাঙ্গীয়ে সারী-৩ মামলা ভূক্ত এরিয়া হতে পুনরায় বালুর বিনিময়ে বারকী শ্রমিকদের নিকট হতে ৮শত হতে ১হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছে।

এবিষয়ে সারী নদীর বালু শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা নিরিহ শ্রমিক। পেটের দায়ে পানিতে বালতী ফেলে কিংবা ডুব দিয়ে বালু সংগ্রহ করতে হয়। এক্ষেত্রে ২শত ফুট কিংবা আড়াইশত ফুট বালু সংগ্রহ করতে প্রায় তিনঘন্টা সময় ব্যয় হয়ে যায়। ফলে একনৌকার অধিক বালু সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। এজন্য আমরা সময় বাঁচাতে একের অধিক নৌকা বালু উত্তোলনের জন্য একান্ত বাধ্য হয়ে আমরা চাঁদা দিয়ে সারী-৩ হতে বালু সংগ্রহ করি। ফলে প্রতিদিন ভোর হতে বিকাল তিনটার মধ্যে দুই হতে তিন নৌকা বালু সংগ্রহ করছি। এভাবে কয়েকশত নৌকা সারী তিন হতে বালু পাথর সংগ্রহ করছেন বলে তারা জানান। টাকা না দিলে সারী-৩ হতে বালু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়না। চাঁদা না দিলে তাদের উপর বালু খেকু চক্রের সদস্যরা হামলা চালায়। কারা চাঁদাবাজিতে করছে জানতে চাইলে,, নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন বারকি শ্রমিক জানান, বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করছেন বৃহত্তর সারী বারকি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি, আওয়ামী লীগ কর্মী আমির আলী ও সাধারণ সম্পাদক নজির আহমদ, একই দলের চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান সেলিম, নিজপাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহিম উদ্দিন ও তাঁর ভাই তাজউদ্দিন, কামরাঙ্গি গ্রামের সিফত উল্লাহ কুটি, ময়না গ্রামের আব্দুল মন্নান, বালু ব্যবসায়ী মাসুক আহমদ, বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুস সোবহান ওরফে সোবহান মোল্লা।

অপর শ্রমিক জানান, এই চক্রকে টাকা দিলে তাদের কোন সমস্য হয় না। তাদের দেওয়া চাঁদা নাকি প্রশাসন সহ আপনাদের সাংবাদিকরাও পান। তাই চাঁদা দিয়ে বালু সংগ্রহ করতে হয়। যেহেতু চাঁদা দিলেও সংশ্লিষ্ট কেউ আমাদের বাঁধাও দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই ঝমেলা বিহীন ভাবে আমরা সারী-৩ হতে বালু আহরন করছি।

অপর আরেক শ্রমিক জানান, আপনারা শ্রমিক বেশে আমাদের সাথে আসুন দেখবেন বালু খেকু চক্রের সদস্যরা কিভাবে নৌকায় বালু উত্তোলনের আগেই চাঁদা আদায় করছেন। আগে চাঁদা দিয়ে পরে নৌকা লোড করতে হয়। আমাদের দাবী সরকার হয়ত কঠোর ভাবে সারী-৩ হতে বালু উত্তোলন আহরণ বন্দ করার জন্য। নতুবা সারী-১, সারী-২ ও বড়গাং নদীর ন্যয় ইজারা প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করলেও আমরা চাঁদাবাজীর কবল হতে মুক্তিপাব। সরকার হারাবেনা রাজস্ব।

এবিষয়ে জানতে স্থানীয় একজন প্রবীণ মুরব্বী চাঁদাবাজ চক্রের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, এগুলো জেনে আর পত্রিকায় লিখে কি হবে। হয়ত দুই-এক দিন বন্দ হবে। পরে আবারও চালু হবে। আপনারাও তাদের কাছে এই সেই হয়ে যাবেন। আপনাদের অনেক লোক সাইকেল গাড়ী নিয়ে আসেন এবং চা,পান সিগারেট খেয়ে আর ফি নৌকায় জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সময় কাটিয়ে চলে যাবেন। টাকার বিনিময়ে জিরো পয়েন্ট হতে বালু পাথর সংগ্রহ হচ্ছে। এসব বন্দ হয়নি আর হবেওনা। তিনি আরও বলেন, সারী-৩ মামলা দিয়ে বন্ধ থাক সবাই চাচ্ছে। বন্ধ রাখতে পারলে চক্রের পকেটে বৎসরে কয়েক কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন হবে। তারা কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মিলে মিশে খাবে। নতুবা প্রশাসন সঠিক ভাবে অভিযান করত। তিনি আরও বলেন প্রশাসন অভিযানে আসার পূর্বেই চক্রের সদস্য সহ সবাই লাপাত্তা হয়ে যায়। আই ওয়াশের জন্য দুই একটি নৌকা রাখা হয় মাত্র।অনুসন্ধানিতে জানা যায় গত ১ বছরে সারী ৩ হতে নিরিহ শ্রমিকের পেটে লাত্তি মেরে ৮০০ টাকা হারে ১১ কোটি টাকার চাদাঁবাজী হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্চুক এক সাবেক জন প্রতিনিধি বলেন গরিব মানুষ শ্রমিক যদি সারী ৩ হতে বালি পাথর আরোহন করে তবে চাঁদা দিবে কেন।চললে ফ্রি চলবে না হয় চাঁদাবাজী বন্ধ হবে।

এই বিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জর্জ মিত্র চাকমা জানান, সারী প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে, নদীতে বার ভিজিট করেছি যদি অবৈধ ভাবে কোন উৎকোচ কেহ আদায় করে। তবে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *