শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ
দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী রাজু গ্রেফতার গুলিস্তান আহাদ পুলিশ বক্সের বিশেষ অভিযানে দ্রুত বিচার, এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ওয়ারেন্ট তামিল ও মাদক উদ্ধার অভিযানে সাফল্য, শায়েস্তাগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্য পেলেন বিশেষ পুরস্কার স্ত্রীর অধিকার আদায়ে তরুণীর অনশন জৈন্তাপুরে ভুয়া ইজারার কাগজপত্র দেখিয়ে কোটি কোটি আত্মসাৎ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গলে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন এর উদ্বোধন জুড়ীতে যুবলীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়াতে বিএনপির সভাপতি মাসুম রেজার প্রকাশ্যে তদবির হিন্দু প্রেমিকের বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা মুসলিম প্রেমিকার অনশন জৈন্তাপুরে মাওলানা শামিম আহমদকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, থানায় অভিযোগ দায়ের নিজ বাড়ি থেকে মোহনা টিভির সাংবাদিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ধর্মের নামে বৃদ্ধকে হেনস্তা, মানবাধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনায় মামলা
নোটিশ
📢 নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 📢 দৈনিক মিডিয়া বাজ পত্রিকায় জেলা, উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে। ✅ আগ্রহী প্রার্থীদেরকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তাদের সম্পূর্ণ সিভি (CV) নিচের ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে অথবা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলফ যাচ্ছে: 📧 ই-মেইল: editor.mediabuzz@gmail.com. 📱 হোয়াটসঅ্যাপ: ০১৭৭৫০৯৮৬৩৮।  🔒 সতর্কতা: উল্লেখিত ই-মেইল এবং মোবাইল নম্বর ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম বা নম্বরে যোগাযোগ করলে এবং তাতে কেউ প্রতারণার শিকার হলে, দৈনিক মিডিয়া বাজ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

বন্যায় মৌলভীবাজারে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

মো: জাকির হোসেন
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে, উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ করে মৌলভীবাজার জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। 

এতে ওই পাঁচ উপজেলার প্রায় কয়েক শতাধিক গ্রামের লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া জেলার সাতটি উপজেলারই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তন্মধ্যে বড়লেখা উপজেলার ৪টি, জুড়ি উপজেলার ৩টি, কুলাউড়া উপজেলার ৩টি, সদর উপজেলার ৪টি এবং রাজনগর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।

পানিবন্দি মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। এছাড়া পশু কোরবানি দিতে গিয়েও চরম বিড়ম্বনায় পড়েন মানুষ। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়কেন্দ্রে ছুঁটছে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন। বন্যা আতঙ্কে নির্মুঘ রাত পার করছেন হাজার হাজার মানুষ।জানা যায়, ঈদুল আযহার দিন ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত হয়।

এতে করে নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট প্লাবিত হলে ঈদের দিনে টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেক ঈদগাহে পানি উঠে যাওয়ায় ঈদের নামাজ হয় উচুঁ স্থান ও মসজিদে। এতে করে জেলার প্রায় সাতটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

সোমবার রাতে প্লাবিত হয়ে যায় কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ এলাকা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মঙ্গলবার সারাদিন বৃষ্টি হওয়ার পর পৌর শহরের মাগুরা, সাদেকপুর, বিহালা, সোনাপুর, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন, মৈন্তাম, ভাগমতপুর, গুপ্তগ্রাম, তিলকপুর, ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর, কুরবানপুর, মুক্তাজিপুর, জাবদা, কালেশার, কাইরচক, চিলারকান্দি, কানেহাত, জয়চন্ডী ইউনিয়নের ঘাঘটিয়া, মিরবক্সপুর, কামারকান্দি, কুঠাগাঁও, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দেখিয়ারপুর, কুলাউড়া গ্রাম, বনগাঁও, গাজিপুর আংশিক, পুরন্দপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়।এদিকে পানিবন্দি মানুষদের খোঁজখবর নিতে হাকালুকি হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এদিকে জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের ২টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন জুড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার বেড়ে গিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই হয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার কারণে ওই এলাকার কিছু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।জেলা প্রশাসনসূত্রে জানা যায়, জেলার বড়লেখা উপজেলার ৪টি, জুড়ি উপজেলার ৩টি, কুলাউড়া উপজেলার ৩টি, সদর উপজেলার ৪টি এবং রাজনগর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।

পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যাক্রান্ত উপজেলাসমূহে সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জুড়ি, বড়লেখা এবং কুলাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ভুক্তভোগী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুলাউড়ার রাবেয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা কাদিপুর ইউনিয়নের মৈন্তাম গ্রামের আক্কাস আলী মিডিয়া বাজকে বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ঘরের ভেতর হাঁটুপানি। একটু পানি বাড়লেই বিছানায় পানি উঠবে। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের দিন বিকেলে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। কখনো কল্পনাও করিনি এইভাবে নিজের বাড়ি ছাড়া হয়ে ঈদ করবো।

এখানে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক এম আতিকুর রহমান আখইকে শুকনো খাবার করতে দেখা গেছে।ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির মিডিয়া বাজকে বলেন, হাকালুকি হাওরের পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ২২টি গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। শহরের সাথে প্রধান সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। প্রশাসনের নির্দেশনা পেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করছি।

কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান মিডিয়া বাজকে বলেন, পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৪০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী বলেন, কুলাউড়ায় এখন পর্যন্ত ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *