শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানাধীন ভাংনি আহমাদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় চলছে। মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাকসুদুর রহমান জামেলী ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে।
২০০৩ সালে জামেলী অধ্যক্ষ থাকাকালে এক নারী প্রতারক—শাহনাজ বেগম বিউটি, যিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সনদ ব্যবহার করে আবেদন করেন—তাকে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দেন। অভিযোগ রয়েছে, শাহনাজ বিউটি নিয়মিত উপস্থিত না থাকলেও বেতন উত্তোলন করে আসছিলেন।
এছাড়া, জামেলী তার ভাতিজা ফকরুল ইসলামকেও কম্পিউটার শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন জাল সনদের মাধ্যমে, কোনো একাডেমিক যাচাই-বাছাই ছাড়াই। তিনি গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মাদ্রাসার বিভিন্ন সম্পদ বন্ধক রেখে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন, যার ফলে ম্যানেজিং কমিটি তাকে বহিষ্কার করে।
বহিষ্কৃত অবস্থায় অবসর নিলেও, মাদ্রাসার মূল কাগজপত্র এখনো তার দখলে রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, জামেলীর আপন শ্যালক গোফরান আল ওয়াহেদী, যিনি বর্তমানে উপাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন, তিনিও অধ্যক্ষের দায়িত্বে না থেকেও জামেলীর অবসর ভাতা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর দেন।
এদিকে, জামেলীর পুত্র মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কথিত তদবীরকারক খালেদ সাইফুল্লাহ তার বাবার দুর্নীতিকে আড়াল করতে সাংবাদিক, মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের নিয়োগ রক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে সন্ত্রাসী কায়দায় তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, শাহনাজ বিউটির মাধ্যমে মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া ও দুইজন প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে জামেলী নিজেই মামলার সাক্ষী হয়েছেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন—দুর্নীতির এ ভয়াবহ চক্রের পেছনে কারা রয়েছে এবং প্রশাসন কেন নীরব? খালেদ সাইফুল্লাহ ও তার পিতা জামেলীর এতদূর পৌছানোর ‘খুঁটির জোর’ই বা কোথায়?