রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২১ অপরাহ্ন
রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের ইমাম মাওলানা আব্দুল কাদের ও শ্যামলীর নূর- মসজিদের ইমাম রফিকুল ইসলামের যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতি, লুটপাটের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। মোহাম্মদপুরের বসিলায় গ্রীণ সিটি-২ এর রোড ৯/৩/ই, ব্লক-সিতে ১০ তলা একটি বাড়ির অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মাওলানা আব্দুল কাদেরের রাজধানীর শ্যামলীতে রোড নং-০২ বাড়ি নং ১৩/৫/এ, (৫ম তলা), শেরে বাংলানগর থানায় বর্তমান বসবাস করছেন। এছাড়াও সাভার হেমায়েতপুরে আলম নগর হাউজিংয়ের রোড নং-১৫, হোল্ডিং নং ১৯-২০ রয়েছে একটি ৬ তলা আলিশান বাড়ি। ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলায় গ্রীণ সিটি-২ এর রোড ৯/৩/ই, ব্লক-সিতে ২টি ফ্ল্যাট-বি ও সি(৩) ও ঢাকা-মেট্রো ৬-২০-০৬৮৮ একটি ব্যাক্তিগত গাড়ি রয়েছে। মাওলানা রফিকুল ইসলাম রাজধানীর শ্যামলীতে রোড-০২ এর হোল্ডিং নং-১২/১ (২য় তলা) ফ্ল্যাটে বর্তমান বসবাস করেন।
সূত্র জানায়, রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের ইমাম মাওলানা আব্দুল কাদের ও শ্যামলীর নূর- মসজিদের ইমাম রফিকুল ইসলামের যোগসাজশে মানুষকে ফ্ল্যাট-প্লট বরাদ্দ দেয়ার নামে বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়ার নাম করে অতিরিক্ত মূল্য ধার্য্য করে হিসাব-নিকাশ গরমিল দেখিয়ে নিজেদের টাকা না দিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় গ্রীণ সিটি-২ এর রোড ৯/৩/ই এলাকায় এই দুই মাওলানা আব্দুল কাদের ও রফিকুল ইসলাম ২টি করে ৪টি ফ্ল্যাট বাগিয়ে নেন। অভিযোগ রয়েছে, পঙ্গু হাসপাতালের মাওলানা আব্দুল কাদের ও শ্যামলীর নূর- মসজিদের রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ব্যয়ের হিসাবে অসামঞ্জস্য, অতিরিক্ত মাত্রায় নগদ লেনদেন, খরচের ক্ষেত্রে সাপোর্টিং ডকুমেন্ট ও বিল ভাউচার না থাকার ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্ধারিত সময়ে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো বা জবাবদিহিতা না করায় বিভিন্ন প্রকার বৈষম্য ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের। সূত্র জানয়া ,তারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর বলেও জানা যায়। পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে এই দুই মাওলানা আব্দুল কাদের ও রফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠতা ছিল। ২০১৭ সালে বসিলার বায়তুল আসকান অ্যাসোসিয়ন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সভাপতি হিসেবে মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও সেক্রেটারী হিসেবে মাওলানা আব্দুল কাদেরকে এক বছরের মেয়াদে মনোনীত করা হয়। কিন্তু জোরপূর্বক কোনো এক অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে এখন পর্যন্ত এই দুই মাওলানা কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারী পদে বহাল রয়েছেন এবং অনুমোদন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে কমিটির কোনো সভাও ডাকছেন না তারা বলে জানা যায়। সূত্র আরও জানায়, ফ্ল্যাট লটারীর মাধ্যমে বন্টন করার ক্ষেত্রেও অনিয়ম করেছে এ দুই লেবাসধারী মাওলানা। আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণ করায় ফ্ল্যাট না দেয়ার পায়তারা করছে তারা।সরেজমিনে গিযে দেখা যায়, রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল কাদের এই দুই মাওলানা অডিট না করে নয়-ছয় করে সময় নষ্ট করছেন এবং ভুক্তভোগী ফ্ল্যাট মালিকদের ফ্ল্যাট বন্টন-রেজিষ্ট্রি করে দিচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন ফ্ল্যাট মালিক জানান, এই দুই মাওলানাকে ফ্ল্যাট ও গ্যারেজ রেজিষ্ট্রির কথা বললে তারা ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি পুলিশ। এ প্রতিবেদক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সাংবাদিকদের সাথে কোনো মতামত দিতে পারবেন না এবং কমিটির মাধ্যমে সমস্ত সমস্যা সমাধান করবেন বলে জানান।অপর দিগে বিষয়টি সম্পর্কে এ প্রতিবেদক মাওলানা আব্দুল কাদেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘বায়তুল আসকান অ্যাসোসিয়েশন’র মালিকগন খুবই খারাপ তারা ফ্ল্যাট রেজিষ্ট্রি ও বন্টন মানতে চান না। তবে আপনারা যদি তাদের একসাথে করে রেজিষ্ট্রি করে দিতে পারেন খুব উকৃত হবো আমর। কিন্তু যখন ভুক্তভোগীগণ রেজিষ্ট্রির জন্য কাগজপত্র ঠিক করছেন এমন সময় তিনি প্রতিবেদককে বললেন আমি ওমরাহ্ করতে যাচ্ছি, ফিরে এসে আমারটা আমি স্বাক্ষর করবো কিন্তু ওমরাহ্ থেকে আসার পর মাওলানা আব্দুল কাদের আর কল রিসিভ করছেন না। পরবর্তীতে তিনি কোনো কল ব্যাকও করেননি। ভুক্তভোগী আবুল বাসার বলেন, মাওলানা আব্দুল কাদের, পঙ্গু হাসপাতালের মসজিদের ইমাম ও রফিকুল ইসলাম, শ্যামলী নূর মসজিদের ইমাম দুজনেই চৌদ্দ হাজার টাকা বেতন পান! আর কি করে তারা হাজার কোটি টাকা মালিক হন ? তিনি আরও বলেন, তারা কিভাবে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করেছেন- মাওলানার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ তলা ভবনের কথা বলে ১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিভিন্ন ফ্ল্যাট মালিকের কাছ থেকে তিনি টাকা চুরি করছেন সরজমিনের ফ্য¬াট মালিক সবাই তার কাছে টাকা দিয়েছেন ভবনের কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করেন অন্যান্য ফ্য¬াট মালিকের টাকা দিয়ে ভবন নির্মাণ করেছেন কিন্তু তার দুই ফ্ল্যাট মাওলানা কাদির সাহেবের নামে নিয়েছেন । মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন, আমাকে একটি লিখিত দিতে হবে আপনারা সমস্ত খরচ মেনে নিয়েছেন তবেই আপনাদের আমি লিখিতভাবে স্ট্যাম্প করে দিব। মাওলানা আব্দুল কাদেরকে পঙ্গু হাসপাতালের মসজিদে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মী জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে আসেন আমি রেজিষ্ট্রি করে দিবো কথা দিয়েছি এই কথা বলে সে ৪ মাস ধরে ঘুরাচ্ছে কিন্তু সাংবাদিক গেলে তিনি বলেন, এরকম কত সাংবাদিক গেল আর আইলো’ আমি এগুলো জানি আমাকে হয়রানি করার জন্য এগুলো পাঠায়। আমি টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট করেছি, আমার ফ্লাটে আমি থাকবো, তাদেরকে কেন কৈফত দিব ? তিনি এইভাবে কয়েক বছর ধরে কাউকে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেননি। নূর মসজিদে মসজিদের পাশে দুই প্রতারক এক বাড়িতে থাকেন। তিনি মানুষকে বুঝায় আমার কিছু নেই আমি একজন ভাড়াটিয়া আমার যদি ফ্ল্যাট বাড়ি থাকতো তাহলে আমি ইমামতি করতাম না তিনি মানুষকে বুঝানোর জন্য অনেক কিছু বলেন । আরও জানা যায় কাদেরের মাইক্রোতে করে অস্ত্র মামলার জেলখাটা আসামি মাসুদ রানাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে এই দুই মাওলানা প্লট ও ফ্ল্যাট দখল করে থাকেন। এই মাসুদ রানা জেল থেকে বেরিয়ে এসে ফ্ল্যাট ও প্লটের মালিকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।