শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
খুলনা মহানগরী ও আশপাশ এলাকায় কয়েক দিনের ব্যবধানে একের পর এক হত্যাকাণ্ডে নগরবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও খুন, হত্যার চেষ্টা ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে সোনাডাঙ্গার সংগীতা সিনেমা হলের সামনে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (পিবিসিপি)-এর আঞ্চলিক নেতা শেখ শাহাদাৎ হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, দুর্বৃত্তরা তাকে ধাওয়া করে সিনেমা হলের নিচে অবস্থিত একটি টায়ারের দোকানের সামনে ধরে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে পিবিসিপি’র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, প্রতিশোধমূলক হামলা অথবা পুরনো রাজনৈতিক কোন্দল থাকতে পারে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত এখনই জানানো সম্ভব নয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রায় দেড় যুগ কারাভোগের পর চলতি বছরের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পান শাহাদাৎ। স্থানীয়রা তাকে মুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে গত রোববার (৩ আগস্ট) নগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বর পাশা এলাকায় গলাকেটে হত্যা করা হয় ঘের ব্যবসায়ী আল-আমিনকে (৩০)। নিহত আল-আমিন স্থানীয় শাহেদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায়ও এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পুলিশের তথ্য মতে, গত কয়েকদিনে খুলনায় চারজনকে কুপিয়ে, গলাকেটে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চরমপন্থী নেতা শাহাদাৎ, ঘের ব্যবসায়ী আল-আমিন, টগর ও ভ্যানচালক আল-আমিন। এছাড়া আলাদা ঘটনায় তোয়েব সোহেলকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত খুলনা মহানগরীতে মোট ১৭টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রতিটি ঘটনায় মামলা হলেও এখনও অনেক খুনের রহস্য অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতহার আলী বলেন, “ইতিমধ্যে চারজন গ্রেফতার হয়েছে। খুব শিগগিরই অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।”
ঘটনাবলীর পর নগরজুড়ে আতঙ্ক ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নগরবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।