শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৩ অপরাহ্ন
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ খোলাবাড়ী মাষ্টারপাড়া গ্রামে আনসার সদস্য ও একদল মাদকসেবীর সন্ত্রাসী তাণ্ডবে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, আনসার সদস্য মো. জিয়াউর রহমান ও তার ভাই চিহ্নিত মাদকসেবী জুয়েল রানার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে একটি সন্ত্রাসী চক্র এলাকায় দাপটের সাথে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই চক্রটি মাদকসেবীদের ব্যবহার করে অর্থের বিনিময়ে জমি দখল, লুটপাট, সম্মানিত পরিবারগুলোকে হয়রানি, এমনকি সাংবাদিক হত্যার ষড়যন্ত্র পর্যন্ত করে যাচ্ছে। বল্লমঝাড় এলাকার প্রয়াত শিক্ষক আজিজার রহমান মাস্টার এবং সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিলনের পরিবারের ওপর গত ১০-১৫ বছর ধরে চলে আসছে লাগাতার হামলা ও হুমকি।
এর আগেও বাংলাদেশ প্রেসক্লাব গাইবান্ধা জেলা শাখার অফিসে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতির সময় সন্ত্রাসীরা হামলার চেষ্টা চালালে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিজিএফআই, সেনাবাহিনী, ডিবি, এনএসআই এবং গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ তা প্রতিহত করে। এ সময় জুয়েল রানা পালিয়ে গেলেও কয়েকজনকে আটক করে মুচলেকা নেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও থামেনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
সর্বশেষ ২৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিজানুর রহমান মিলন ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগমের ওপর হামলা চালায় জিয়াউর ও জুয়েল রানা নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসীরা। মিলনকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং আফরোজা বেগমকে মাথায় গুরুতর আঘাত করে। খবর পেয়ে গাইবান্ধা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত আফরোজা বেগমকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় মিলন পরপর দুটি জিডি করেছেন (নং: ৯৪২/২০২৫ ও ৫৩৯, তারিখ: ০৯/০৮/২০২৫)। কিন্তু সন্ত্রাসী চক্রের দৌরাত্ম্য কমেনি। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।
চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে রয়েছেন:
এ চক্রটি শুধু খোলাবাড়ী গ্রামেই নয়, গোটা বল্লমঝাড় এলাকায় ভীতি ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ রয়েছে, মাদক সেবনের টাকার যোগান দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমান চক্রকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেন।
এছাড়াও, চলতি বছরের ১৫ জুন ‘ক্রাইম পেট্রোল ইনভেস্টিগেশন’-এর সহ-সম্পাদক ও ক্যাট জার্নালিস্ট কমিটি বাংলাদেশের সদস্য সচিব মুক্তা মিয়াকে মোবাইলে হত্যার হুমকি দেন আনসার সদস্য জিয়াউর রহমান। এতে মুক্তা মিয়া ২২ জুন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে। গাইবান্ধা জেলা পুলিশের প্রতি বারবার ফোন করা হলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে।
স্থানীয়দের জোর দাবি, সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হোক।