শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মত্তপাড়া গ্রামে নজু পাঠান গ্যাংয়ের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু ও কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবে এক বিধবা নারী, দুই রেমিট্যান্স যোদ্ধা এবং এক স্কুলছাত্রী চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্থানীয় নজু পাঠান, আওলাদ পাঠান, রব পাঠান, হারেছ পাঠান, ফিরু পাঠান ও তাদের সহযোগী কিশোর গ্যাং সদস্যরা সম্প্রতি কাতারপ্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা শিশির ও শিরনকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা করে এবং চারদফা বেধড়ক মারধর করে চোর সাব্যস্ত করার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শ্রীনগর থানার এসআই আব্দুল কাদির ভূমিদস্যুদের পক্ষে কাজ করছেন। নির্যাতনের অংশ হিসেবে তিনি নিজ হাতে শিরনকে হ্যান্ডকাফ দিয়ে পেটান। এ সময় দুই ভাইকে বাঁচাতে গেলে ছোট বোন, এক স্কুলছাত্রী, সন্ত্রাসীদের হাতে শ্লীলতাহানি ও হত্যার হুমকির শিকার হন।
অসহায় পরিবারটি বর্তমানে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জানা যায়, ২০১৮ সালে এক শান্তিরক্ষা মামলায় মুচলেকা দিয়েও থামেনি এই চক্র। পরবর্তীতে বিধবা সিমা বেগম আদালতে সিআর ২২৮(১৩)/২৫ নম্বর মামলা দায়ের করেন এবং স্কুলছাত্রী সুস্মিতা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
তথ্যমতে, শিশির ও শিরন দীর্ঘদিন কাতারে ছিলেন। দাদার অসুস্থতার খবর পেয়ে দেশে ফিরে কয়েক দিনের মাথায় দাদার মৃত্যু হয়, এরপর বাবাও শোকে মৃত্যুবরণ করেন। ঠিক তখনই নজু গ্যাং তাদের নিজস্ব বাড়িতে ভাড়া দাবি করে।
পরিবারটি ভূমি অফিসে কাগজপত্র যাচাই করে নিজেদের মালিকানা প্রমাণ করলে ভূমিদস্যুরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিত হামলা চালায়। শিশির ও শিরন কে অমানুষিক নির্যাতন হইতে রক্ষার জন্য প্রত্যক্ষদর্শী শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসা এক জামাই শিশির ও শিরনের প্রাণ প্রাণভিক্ষা চাওয়া সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা থেমে থাকেনি। এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
সাম্প্রতিক ঘটনায় নজু গ্যাং এলাকায় একটি একহাজার টাকার মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে মানববন্ধন করে এবং শিশির ও শিরনকে হত্যার হুমকি দিয়ে গ্রামছাড়া করে।
এলাকাবাসী ও সচেতন মহল জানান, নজু গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না বলেই সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বিধবা সিমা বেগম তার দুই সন্তান রেমিট্যান্স যোদ্ধা ও স্কুলছাত্রীকে নিয়ে নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
সচেতন মহল অবিলম্বে নজু গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।