শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া থানার তেলিখালি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জলিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ তার অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সচিব জলিল অভিনব কায়দায় সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। প্রায় ৪-৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি আলিশান দ্বিতল ভবন এবং ৫-৭ বিঘা জমির ওপর বিশাল পুকুরসহ রয়েছে প্রচুর সম্পদ, যা তার আয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। পুকুরটির চারপাশ টাইলস দ্বারা নির্মিত বেষ্টনিতে মোড়ানো। এছাড়া নামে-বেনামে আরও জমি ও সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সরকারি অনুদান আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসী একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করলেও অদৃশ্য শক্তির আশ্রয়ে আজও তা বিচারাধীন রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদটি যেন দুর্নীতি ও হয়রানির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে একাধিক ভুক্তভোগী জানান, জন্মনিবন্ধন সংশোধনে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। সফটওয়্যার সমস্যা দেখিয়ে দুই-তিনবার বাড়তি ফি আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া আইডি কার্ড সংশোধন, ভাতা কার্ড ও মৃত্যু সনদ ইস্যুতেও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অনেকে চোখের পানি ফেলেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ফিরে গেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন হাওলাদারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় সচিব জলিল দীর্ঘদিন ধরে একক আধিপত্য কায়েম করেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর দুর্নীতির বিচার এড়াতে সচিব জলিল বিভিন্ন দপ্তরে বদলির জন্য জোরালো তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, “দুর্নীতিবাজ সচিব জলিলকে দ্রুত অপসারণ করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” তারা আরও বলেন, “তেলিখালি ইউনিয়নে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এটি এখন সময়ের দাবি।”